নিউজিল্যান্ডের মাটিতে ইতিহাস গড়ল বাংলাদেশ

উপমহাদশের কোনও দলের জন্য নিউজিল্যান্ডের মাটিতে জয় তুলে নেয়াটা রীতিমত স্বপ্নের মতো। মাউন্ট মঙ্গানুইয়ের বে ওভালেই সেই আরাধ্য স্বপ্নকেই স্পর্শ করল বাংলাদেশ। টেস্টের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন নিউজিল্যান্ডকে ৮ উইকেটে হারিয়ে টাইগাররা গড়ল নতুন ইতিহাস। রেকর্ড গড়া এই জয়ে সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেল মোমিনুল হকের দল।

মাত্র ১৭ রানের লিড নিয়ে পঞ্চম ও শেষ দিন শুরু করা নিউজিল্যান্ড আরও মাত্র ২২টি রান যোগ করতেই টাইগার বোলিং তোপে পুড়ে ছারখার হয়ে যায়। প্রথম ৫ উইকেটের ৪টিই শিকার করা সেই এবাদত হোসাইন ইনিংসে শিকার করেন ক্যারিয়ার সেরা ৬ উইকেট। যা একইসঙ্গে নিউজিল্যান্ডে বাংলাদেশি কোনও বোলারের সেরা বোলিং। প্রায় ৯ বছর পর কোনও বাংলাদেশি পেসারের ৫ বা তার বেশি উইকেট শিকারের এমন অনন্য কীর্তি গড়ে দেয় টাইগারদের ঐতিহাসিক জয়ের সোজা পথ। 

 যে পথের পাড়ি দিতে লাগত মাত্র ৪০টি রান। ইঞ্জুরি আক্রান্ত মাহমুদুল হাসান জয়ের পরিবর্তে তাই নিয়মিত ওপেনার সাদমান ইসলামের সঙ্গে ওপেনিংয়ে নামতে হয় নাজমুল হোসাইন শান্তকে। যদিও মামুলী লক্ষ্যে খেলতে নেমে বাংলাদেশ হারায় দুই ওপেনারকেই। তবে অধিনায়ক মোমিনুল হকের সাবধানী ব্যাটিংয়ে প্রথম সেশনেই জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় বাংলাদেশ।

৪৪ বলে ১৩ রান করে অপরাজিত মোমিনুলের সঙ্গে জয়ের সাক্ষী ছিলেন অভিজ্ঞ মুশফিকুর রহিম। যিনি ৭ বলের মোকাবেলায় একটি চারের মারে ৫ রান করে অপরাজিত থাকেন। অবশ্য মুশফিকের ব্যাট থেকেই আসে জয়সূচক চারের মারটি। ১৬.৫ ওভারে ৪২ রান তুলে ঐতিহাসিক জয় নিশ্চিত করে বাংলাদেশ।

যা নিউজিল্যান্ডের মাটিতে যে কোনো ফরম্যাটে বাংলাদেশের প্রথম জয়। আর ৩২ টেস্ট খেলে এবারই প্রথম বিদেশের মাটিতে নিউজিল্যান্ডকে হারাল বাংলাদেশ। র‍্যাংকিংয়ের শীর্ষ পাঁচে থাকা কোনো দলের বিপক্ষে ঘরের বাইরে প্রথম জয়ও এটি। এছাড়া নিজেদের ৬১ টেস্টের মধ্যে বিদেশের মাটিতে প্রথম জয়ও এটাই।

বাংলাদেশের কাছে এই ম্যাচ হেরে টানা সিরিজ জয়ের সুযোগ হারিয়েছে কিউইরা। যার ফলে এখন ভাঙার পথে নিজেদের মাটিতে কিউয়িদের টানা ৮ সিরিজ জয়ের রেকর্ডটিও। অন্যদিকে, নিউজিল্যান্ডের মাটিতে কিউইদের টানা ১৭ ম্যাচ জয়ের রেকর্ড ভেঙে প্রথম দল হিসেবে জয়ের অনন্য এই কীর্তি গড়েছে বাংলাদেশ। 

যে জয়ের কারিগর হিসেবে সেরা খেলোয়াড় নির্বাচিত হয়েছেন ক্যারিয়ারে প্রথমবার পাঁচ বা ততোধিক উইকেট নেয়া টাইগার পেসার এবাদত হোসাইন। প্রথম ইনিংসে ৭৫ রানে ১টি মাত্র উইকেট নেয়ার পর দ্বিতীয় ইনিংসেই নিজের যোগ্যতার প্রমাণ দিয়ে ৪৬ রানের বিনিময়ে তুলে নেন কিউয়িদের ৬টি উইকেট। 

এর আগে অবশ্য কোনও চার উইকেটও পাননি এই ফাস্ট বোলার। সেরা ফিগার ছিল ৮১ রানে ৩ উইকেট, ভারতের বিপক্ষে, কলকাতা টেস্টে। যার মধ্যে ছিল সর্বশেষ সেঞ্চুরি হাঁকানো বিরাট কোহলির উইকেটটিও। সূত্রঃ একুশেটিভি। সম্পাদনা ম\হ। না ০১০৫\০১

Related Articles