কোভ্যাক্সে আর্থিক সহায়তা বাড়ানোর ঘোষণা ট্রুডোর

ভ্যাকসিনের বৈশ্বিক অনুদানের যে গতি তা রীতিমতো আশঙ্কার। ধনী দেশগুলো কোভ্যাক্স উদ্যোগে এখন পর্যন্ত মাত্র ১৩০ কোটি ডোজ ভ্যাকসিন অনুদান দিয়েছে। এর মধ্যে মাত্র ১৫ কোটি বিতরণ করা হয়েছে। এ অবস্থায় বছরের শেষ নাগাদ বিশ্বের ৪০ শতাংশ মানুষকে যাতে ভ্যাকসিনেশনের আওতায় আনা যায় সেজন্য জরুরিভিত্তিতে আরও ৫৫ কোটি ডোজ ভ্যাকসিন অনুদান দেওয়ার জন্য ধনী দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাপরিচালক।

এদিকে, কোভ্যাক্সের মাধ্যমে ১ কোটি ডোজ মডার্নার ভ্যাকসিন অনুদান দিচ্ছে কানাডা। পাশাপাশি আফ্রিকায় ভ্যাকসিনেশনে সহায়তার অংশ হিসেবে আরও ১ কোটি ৫০ লাখ ডোজ এমআরএনএ ভ্যাকসিন দেওয়া হবে বলে শনিবার জানিয়েছেন কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো।

রোমে জি২০ নেতাদের সম্মেলনে যোগ দিয়ে অনুদানের বিষয়ে বিস্তারিত জানান জাস্টিন ট্রুডো। পাশাপাশি কোভ্যাক্সে আর্থিক সহায়তা বাড়ানোর ঘোষণাও দিয়েছেন তিনি। আগামী বছরের শেষ নাগাদ নিম্ন ও মধ্য আয়ের দেশগুলোকে কমপক্ষে ২০ কোটি ডোজ ভ্যাকসিন অনুদান অথবা এজন্য অর্থ পরিশোধের লক্ষ্যের কথাও জানান কানাডার প্রধানমন্ত্রী।

কানাডা এর আগে কোভ্যাক্সে নিজেদের কেনা ৪ কোটি ডোজ এবং আরও ৮ কোটি ৭০ লাখ ডোজের জন্য ৫০ কোটি ডলার পপরিশোধের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। এখন পর্যন্ত কানাডার চুক্তি থেকে ৩৪ লাখ ডোজ ভ্যাকসিন সরবরাহ করা হয়েছে। তবে কানাডার অর্থে ঠিক কত ডোজ ভ্যাকসিন কেনা হয়েছে সেটি এখনও পরিস্কার নয়।

উপপ্রধানমন্ত্রী ক্রিস্টিয়া ফ্রিল্যান্ড বলেন, কোভিড-১৯ পরীক্ষা ও চিকিৎসা নিয়ে সমস্যায় থাকা দেশগুলোকে সহায়তার আন্তর্জাতিক উদ্যোগ এসিটিতে যে ছয়টি দেশ সহায়তা দিয়েছে কানাডা তার মধ্যে অন্যতম। আমরা আমাদের অংশটা করছি। এটাই সঠিক কাজ।

ফ্রিল্যান্ড বলেন, কানাডার ফেডারেল ও প্রাদেশিক ফ্রিজারে ১ কোটি ৭৫ লাখ ডোজ মডার্না ও ফাইজার-বায়োএনটেকের ভ্যাকসিন মজুদ থাকলেও তা সরবরাহ সরকারের হাতে নেই। এই সরবরাহ থেকে কোভ্যাক্সে অনুদান দেওয়া হবে না। যেসব ভ্যাকসিনের জন্য কানাডা অর্থ পরিশোধ করেছে কিন্তু এখন পর্যন্ত হাতে পায়নি সেখান থেকেই অনুদান দেওয়া হবে। অর্থাৎ সরবরাহের বিষয়টি নির্ভর করছে সরবরাহকারীদের ওপর।

বিশ্বের বৃহৎ অর্থনীতিগুলো কোভিড-১৯ মহামারি থেকে বেরিয়ে আসতে লড়াই করতে থাকায় ভ্যাকসিন ন্যায্যতার বিষয়টি জি২০ সম্মেলনের আলোচনায় বিশেষ জায়গা করে নেয়। অসম ভ্যাকসিন কর্মসূচি দরিদ্র দেশগুলোর অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারকে পিছিয়ে দিচ্ছে বলে সতর্ক করে দিয়েছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)।

সম্মেলনের আয়োজক ইতালির প্রধানমন্ত্রী মারিও দ্রাঘি তার উদ্বোধনী বক্তৃতায় বলেন, ভ্যাকসিন সরবরাহে অন্যায্যতা বিস্ময়কর।

বিশে^র ধনী দেশগুলো ৭০ শতাংশের বেশি মানুষকে এরই মধ্যে ভ্যাকসিনেশনের আওতায় নিয়ে এসেছে। অন্যদিকে দরিদ্র দেশগুলোতে এ হার এখনও ৩ শতাংশের নিচে। কানাডার প্রতি চারজনের তিনজন বর্তমানে পুরোপুরি ভ্যাকসিনেটেড। যেখানে আফ্রিকায় প্রতি ২০ জনের মধ্যে ভ্যাকসিন পেয়েছেন মাত্র একজন। এ ব্যবধান নৈতিকভাবে অগ্রহণযোগ্য ও বৈশি^ক অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের রাশ টেনে ধরছে বলে মন্তব্য করেন মারিও দ্রাঘি। সূত্রঃ  বেঙ্গলি টাইমস। সম্পাদনা ম\হ। না ১১১৪\০৭

Related Articles