নামাজে সোস্যাল ডিসট্যান্সিং

কি ভাবছেন? অসম্ভব বিষয়!! করোনাকালীন সময়ে আমেরিকার মসজিদে মসজিদে সামাজিক দুরত্ব রেখে নামাজ পড়া হচ্ছে। এই মসজিদে আমি নিজে নামাজ পড়ি; এবং ভিডিওটি আমি নিজে করেছি। মসজিদের ভিতরে ও বাহিরে পরস্পর থেকে ন্যুনতম ৬ ফুট দুরত্ব রেখে কাতারবন্ধি করা হয়। এই মসজিদটিতে কমপক্ষে ৩ হাজার মুসল্লি একসাথে নামাজ পড়তে পারেন। রমজানে নিয়মিত দান সাদাকাহ অব্যাহত রয়েছে। 

তারাবিহ নামাজ ৮ রাকায়াত পড়ানো হয়। ৪ রাকায়াত পড়ার পর ইমাম সাহেব ইংরেজীতে বয়ান করেন। প্রতিদিন মুসল্লিগনের মোট দানের পরিমান কমপক্ষে ৫০ হাজার ডলার থেকে ১০ লক্ষ ডলার। এমনো অনেককে দেখি যিনি ১ লক্ষ ডলার দান করেন। জানিনা আল্লাহ তায়ালা তাদের কত সম্পদ দিয়েছেন। আমার বিশ্বাস এমন অর্থবিত্ত ও ইসলামী জ্ঞানে সমৃদ্ধ মুসলিম সমাজ সোস্যাল ডিসট্যান্সিং মেইনটেইন করে যেভাবে নামাজ পড়ছেন সেভাবে বাংলাদেশে পড়ানো হচ্ছে কিনা। আমি মনে করি করোনাকালে এভাবেই নামাজ আদায় করা উত্তম।

বাংলাদেশের অনেকেই হয়ত এভাবে নামাজ পড়ার সাথে সহমত পোষন নাও করতে পারেন কিন্তু আমি মনে করি এটিই বিজ্ঞানসম্মত এবং এটিই যৌক্তিক। আমি মনে প্রাণে বিশ্বাস করি ইসলাম একটি বিজ্ঞানময় জীবনবিধান।করোনাকালীন  বাংলাদেশে যদি দুরত্ব বজায় রেখে নামাজ আদায় করার ফতোয়া দেওয়া হত তাহলে হয়ত করোনা মোকাবেলায় কিছুটা সহায়ক হতে পারতো। 

শুধু মসজিদ কেন, প্রতিটি উপাসনালয়, সপিং মল, হাট বাজার, সিনেমা হল, প্রতিটি গ্যাদারিং প্লেসে বাংলাদেশের উচিত সামাজিক দুরত্ব বজায় রাখা। এই মসজিদে লকডাউনের সময় অল্প কিছু মুসল্লির উপস্হিতিতে জামাত করা হত। নামাজ যেহেতু সর্বাবস্থায় পড়তে হবে সুতরাং সোস্যাল ডিসট্যান্সিং মেনে চলে মসজিদে মসজিদে নামাজ আদায় করা উত্তম বলে আমি মনে করি। 

অনেকেই হয়ত এভাবে নামাজ পড়ার বিরুদ্ধে মতামত দিতে পারেন। নিচে নামাজের কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে নামাজ পড়ার বিধান সম্বলিত সহীহ হাদিস নিম্নে সংযোজন করছি। 

আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা সালাতের ইক্বামাত(ইকামত/একামত) দেয়া হলো। রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের দিকে চেহারা ফিরালেন এবং বললেন, নিজ নিজ কাতার সোজা করো এবং পরস্পর গায়ে গায়ে লেগে দাঁড়াও! নিশ্চয় আমি আমার পেছনের দিক হতেও তোমাদেরকে দেখতে পাই। (বুখারী; বুখারী ও মুসলিমের মিলিত বর্ণনা হলো, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ সালাতের কাতারগুলোকে পূর্ণ করো। আমি আমার পেছনের দিক থেকেও তোমাদেরকে দেখতে পাই।)

সহীহ : বুখারী ৭১৮, ৭১৯, মুসলিম ৪৩৪

লেখাটি পাঠিয়েছেন: এস.এম মঞ্জুরুল ইসলাম

শিকাগো, মার্কিনযুক্তরাষ্ট্র

Related Articles